রোজার মাসে ভাজাপরি খাবার সমস্যা

 

Photos by google

রোজায় দামি খাবার খেতে হবে এমন নয় বরং সুষম, সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। গুরুপাক খাবার, পোড়া তেল, বাইরে ভাজা-চপ, পেঁয়াজি, বেগুনি, কাবাব, হালিম, মাংস-জাতীয় খাবার না খাওয়া ভালো। এতে হজমে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।


দিনের বেলায় দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে রোজার শেষে শরীর, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুকোষ খাবারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শক্তির জোগান চায়। তাই দীর্ঘ সময় পর ইফতারে খাবারটাও তেমন সহজ ও সুপাচ্য হওয়া চাই। চাই স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর ও সুষম।


কী খাবেন, কী খাবেন না


* খেজুর বা খোরমা অবশ্যই খাবেন। এতে আছে শর্করা, চিনি, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, কপার, সালফার, ম্যাঙ্গানিজ, সিলিকন, ক্লোরিন ফাইবার, যা সারা দিন রোজা রাখার পর খুবই দরকারি।


* চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিলে ভালো হয়। এটা খুব তাড়াতাড়ি রক্তে চিনির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, ওজন বাড়ায়। তাই যথাসম্ভব চিনি ও চিনিযুক্ত খাবার কম খান।


* সবজি ও ফল খেতে হবে নিয়মমতো। তা না হলে এই সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য হবে নিত্যসঙ্গী।


* এই গরমে অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি না খেলে হজমের সমস্যা হবে। ইফতারের পর থেকে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত একটু পরপর পানি খেতে হবে।


* সুষম খাবার খেতে হবে। আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন, দুধ, দই, মিনারেল, আঁশ ইত্যাদি খেতে হবে নিয়মমতো।


* আঁশসমৃদ্ধ খাবার যেমন লাল আটা, বাদাম, বিনস, শস্য, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে। এগুলো হজম হয় আস্তে আস্তে, তাই অনেক সময় পর ক্ষুধা লাগে। রক্তে চিনির পরিমাণ তাড়াতাড়ি বাড়ে না।


* কাচা ছোলা খাওয়া ভালো। তবে তেল দিয়ে ভুনা করে খাওয়া ঠিক না।


* চা, কফির মাত্রা কমাতে হবে। তা না হলে পানিশূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য, ঘুমের সমস্যা হতে পারে।


* সাহরিতেও খুব বেশি খাওয়া বা সাহরি না খাওয়াও ঠিক না। সাহরি না খেলে শরীর দুর্বল হয়ে যাবে।


* বর্জন করতে হবে ভাজা-পোড়া ও গুরুপাক খাবার যেমন: ছোলা ভুনা, পেঁয়াজি, বেগুনি, চপ, হালিম, বিরিয়ানি ইত্যাদি বাদ দিতে হবে।


* প্রতিবেলা মাংস না খেয়ে অন্তত একবেলা মাছ খেতে চেষ্টা করতে হবে।


* সহজপাচ্য খাবার, ঠান্ডা খাবার যেমন দই, চিড়া খাবেন। তাহলে সারা দিন রোজা রাখা নাজুক পাকস্থলী ঠিকমতো খাবার হজম করতে পারবে।


* কোষ্ঠকাঠিন্য হলে ইসবগুল খেতে পারেন।


* বেশি দুর্বল লাগলে ডাবের পানি বা স্যালাইন খেতে পারেন ইফতারের পর।


* কোমল পানীয় ঘুমের সমস্যা, অ্যাসিডিটি, আলসার ইত্যাদির কারণ। তাই এ কোমলপানীয়কে সারা জীবনের জন্য পারলে বাদ দিন।


বিশেষ ক্ষেত্র


বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত যেমন: ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, কিডনি ইত্যাদি রোগীরাও রোজা পালন করতে পারবেন, তবে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধের ডোজ, খাবারদাবার ও নিয়মকানুন জেনে নেওয়াই ভালো।


লেখক: চিকিৎসক

None

Post a Comment

Previous Post Next Post